Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে

Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে, স্টারলিংক ইন্টারনেট কি, স্টারলিংক ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে এবং স্টারলিংক এর সুবিধা সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।  


কেননা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা Starlink - স্টারলিংক চালু হয়েছে। তাই অনেকের মনেই Starlink - স্টারলিংক নিয়ে নানা রকমের প্রশ্নের উৎপত্তি হচ্ছে। তাই আপনাদের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সাজিয়েছি। 



Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে



Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে

বর্তমান বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল নির্ভর ইন্টারনেট সেবা বিদ্যমান। কিন্তু Starlink - স্টারলিংক হলো স্যাটেলাইট অর্থাৎ কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। ফলে Starlink - স্টারলিংক সারা বিশ্বকে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা দিতে সক্ষম।


তাই বাংলাদেশে চালু হচ্ছে ইলন মাস্কের Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা। ৯ ই এপ্রিল ২০২৫ বুধবার বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্মেলন রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এ পরীক্ষামূলকভাবে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। 


এ সম্মেলনে বিএসসিএল (Bangladesh Satellite Company Limited - বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড) এর স্টলে দর্শনার্থীরা বিশেষ কিউআর (QR) কোড ব্যবহার করে বিনামূল্যে স্যাটেলাইট চালিত ইন্টারনেট প্রযুক্তির গতি পরীক্ষা করার সুযোগ পেয়েছেন। বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্মেলনের কার্যক্রম Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহার করে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। 


বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় যেসব এড়িয়ে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছায় না সেসব জায়গায় Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট কিট স্থাপন করা হচ্ছে। 


এবার জেনে নেই, বাংলাদেশে এই স্যাটেলাইট ভিত্তিক Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা পেতে হলে কত খরচ পড়বে। 


Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট এর মাসি খরচ এবং বার্ষিক খরচ নির্ভর করে দেশ ও প্যাকেজের ধরনের উপর। বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন দাম হতে পারে। Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট এখনো বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে পুরোপুরি চালু না হলেও বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় পরীক্ষামূলক সেবা শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। 


তাই বাংলাদেশে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে তা এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে দেশে ব্যবহৃত সাবমেরিন ক্যাবল নির্ভর ইন্টারনেট সেবার তুলনায় Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বেশি পড়বে। 


কিন্তু Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট এর দাম বেশি হলেও এটি দুর্গম এলাকায় অর্থাৎ যেসব এলাকায় তারের সংযোগ পৌঁছায় না সেসব এলাকায়ও  উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানে সক্ষম। 


তবে বাংলাদেশে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা অফিসিয়াল ও বাণিজ্যিক ভাবে চালু হলে স্থানীয় চাহিদা ও প্রতিযোগিতার কারণে দাম কম হতে পারে। সাধারণ গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে সরকার ও Starlink - স্টারলিংক এর মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে খরচ কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। 


বাংলাদেশ Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর খরচ কত হতে পারে তার সঠিক তথ্য জানতে হলে Starlink - স্টারলিংক এর অফিসিয়াল ঘোষণার অপেক্ষায় থাকতে হবে। 


Starlink - স্টারলিংক এর ওয়েবসাইট থেকে অন্যান্য দেশের ইন্টারনেট সেবা খরচ সম্পর্কে জানা যায়, আবাসিক / বাসা বাড়িতে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা পেতে একটি ফুল সেট Starlink - স্টারলিংক কিট কিনতে হয়। 



Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে


Starlink - স্টারলিংক কিট এর মধ্যে রয়েছে একটি রিসিভার / অ্যান্টেনা, কিকস্ট্যান্ড, রাউটার, তার ও পাওয়ার সাপ্লাই / বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। এই ফুল সেট কে বলা হয় Starlink - স্টারলিংক কিট, যার মূল্য ৩৪৯ থেকে শুরু করে ৫৯৯ ডলার পর্যন্ত যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। 


আবাসিক / বাসা বাড়িতে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবার সর্বনিম্ন মাসিক ফি ১২০ ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। কর্পোরেট গ্রাহকদের জন্য কিটের দাম ও মাসিক ফি দ্বিগুনেরও বেশি। তবে দেশ অনুযায়ী Starlink - স্টারলিংক এর দামের ভিন্নতা রয়েছে। 


দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট এর প্রথম যাত্রা শুরু হয় ভুটানে। ভুটানে প্রতি মাসে রেসিডেন্সিয়াল ফিক্সড ইন্টারনেটের জন্য ৪ হাজার  ভূটানিজ গুলট্রাম খরচ হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫,৮০০ টাকা। 
দক্ষিণ এশিয়ায় ভুটানে প্রথম স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।



স্টারলিংক ইন্টারনেট কি

Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট হল— কৃত্রিম উপগ্রহ অর্থাৎ এটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারাবিশ্বে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে থাকে। স্পেসএক্স (SpaceX - Space Exploration Technologies Corporation) Starlink - স্টারলিংক এর মূল প্রতিষ্ঠান এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, স্টারলিংক ইন্টারনেট জিওস্টেশনারি (ভূস্থির উপগ্রহ ) থেকে ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার উপর থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে আসে। 


Starlink - স্টারলিংক হলো পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপিত হাজার হাজার স্যাটেলাইট এর একটি সমষ্টি যা, সারা বিশ্বকে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে সক্ষম। 


২০২৫ সালের ৩০ শে জানুয়ারি পর্যন্ত Starlink - স্টারলিংক ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য মতে, ৬ হাজার ৯৯৪ টি Starlink - স্টারলিংক স্যাটেলাইট স্থাপিত হয়েছে। এ স্যাটেলাইট গুলো পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৪২ মাইল বা ৫৫০ কিলোমিটার উপরে কক্ষপথে ঘুরছে। 


ইলেন মাস্কের Starlink - স্টারলিংক প্রকল্প ২০১৫ সালে কাজ শুরু করে SpaceX (যা একটি মার্কিন মহাকাশযান প্রস্তুতকারক এবং মহাকাশযাত্রা সেবা প্রদানকারী কোম্পানি)।Starlink - স্টারলিংক ২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। বর্তমান বিশ্বের প্রায় ১০০ টিরও বেশি দেশে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। 


বর্তমান বাংলাদেশ যে ইন্টারনেট সেবাটি চালু রয়েছে তা হলো সাবমেরিন কেবল নির্ভর ইন্টারনেট। এটি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা সমুদ্রের তলদেশ থেকে তারের মাধ্যমে ব্র্যান্ডউইডথ এনে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। 



স্টারলিংক ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে

Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে কাজ করে। বর্তমানে Starlink - স্টারলিংক এর ৬ হাজার ৯৯৪ টি স্যাটেলাইট রয়েছে। যা পৃথিবীর কক্ষপথে পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৪২ মাইল বা ৫৫০ কিলোমিটার উপরে প্রতিনিয়ত ঘুরছে। 



Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর কত খরচ পড়বে



Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে স্টারলিংক কীট সরঞ্জাম যেমন টেলিভিশনের এন্টেনার মত একটি ডিভাই স ডিভাইস বসাতে হবে, এটি পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা স্যাটেলাইটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। আর এই এন্টেনার সঙ্গে Starlink - স্টারলিংক একটি রাউটার স্থাপন করে গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা পেয়ে থাকে। 


Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট মেগাবাইট পার সেকেন্ড 25 থেকে 220 এমবিপিএস ডাউনলোড গতি। তবে ১০০ এমবিপিএস এর বেশি গতি বেশিরভাগ ব্যবহারকারী পেয়ে থাকেন। Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট মেগাবাইট পার সেকেন্ড ৫ থেকে ২০ এমবিপিএস এর মধ্যে থাকে আপলোড গতি। 



স্টারলিংক এর সুবিধা

বাংলাদেশে Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বাংলাদেশের দুর্গম অঞ্চলে যেসব জায়গা তার যায়নি সে অঞ্চল গুলোতে স্যাটেলাইট ব্যবহার করে খুব সহজে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে। এর ফলে গ্রাম ও শহরের মানুষ একই গতিতে ইন্টারনেট সেবা পাওয়ার ফলে শহর ও গ্রামের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে না। 


গ্রামে বসেই মানুষ উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং সহ বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট ভিত্তিক কাজ করতে পারবে। এছাড়াও দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলে এবং দুর্যোগের সময় Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারবে। 


কারণ কোন এলাকায় দুর্যোগ হলে সেখানকার নেটওয়ার্ক সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায় সে এলাকা থেকে রেসকিউ অঞ্চলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু Starlink - স্টারলিংক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রধান করায় দুর্যোগের মধ্যেও যোগাযোগ করা যাবে। 


Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট দ্বারা গোপনীয়তা রক্ষা করে যোগাযোগ করার সুযোগ রয়েছে। তবে আড়ি পাতার সুযোগ না দিয়ে Starlink - স্টারলিংক যদি বাংলাদেশের সেবা দেয় তাহলে অনেকেই Starlink - স্টারলিংক ব্যবহারে আগ্রহী হবে। 



শেষ কথা, যদিও Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যয়বহুল হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ব্যবহারের ক্ষমতার বাইরে হলেও যারা বর্তমানে দেশের বিদ্যমান ইন্টারনেট ব্যবহারে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং ইন্টারনেট গতি মান নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন ও মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা খুঁজছেন তাদের জন্য Starlink - স্টারলিংক ইন্টারনেট বিকল্প সুযোগ হবে। 

Post a Comment

0 Comments